কলকাতা, ১৪ আগস্ট:
উত্তর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী বয়েজ ওন লাইব্রেরী হলে রবিবার এক ভিন্ন মাত্রার সাংস্কৃতিক আয়োজন করল সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠন বেরঙিন কলম। অনুষ্ঠানের নাম ছিল— ‘পদাতিকের কলরব’। দিনটি ছিল বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মজয়ন্তীর প্রাক্কালে তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদানের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য, সমাজকর্মী শুভজিৎ দত্তগুপ্ত, প্রকাশক ও সাহিত্যকর্মী স্বপ্ননীল বিশ্বাসসহ বহু বিশিষ্টজন। তাঁদের বক্তব্যে উঠে আসে সাহিত্য-সংস্কৃতি ও সমাজসচেতনতার নিবিড় সম্পর্কের কথা।
‘পদাতিক’ পত্রিকার ষষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ
এদিন প্রকাশিত হয় জনপ্রিয় সাহিত্যপত্রিকা ‘পদাতিক’-এর ষষ্ঠ বর্ষপত্র। প্রকাশনার মুহূর্তে আবেগতাড়িত স্বপ্ননীল বিশ্বাস ঘোষণা করেন— “পদাতিকই সেরা পত্রিকা”। তিনি জানান, এই পত্রিকা আগামী দিনে বাংলার সাহিত্যচর্চাকে নতুন দিশা দেখাবে।
নাটক-সংগীতে সমাজ বার্তা
সাংস্কৃতিক পর্বে মঞ্চস্থ হয় একাধিক নাট্য ও সংগীত পরিবেশনা, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য—
- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী নাটক ‘চণ্ডালিকা’
- জীবনানন্দ দাশের স্মৃতিকে কেন্দ্র করে বিশেষ অনুষ্ঠান
- ‘আমাদের দিল বদলের গান’ পরিবেশনা
- লিঙ্গবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী নাটক ‘মৃত রানীর গল্প’
প্রতিটি পরিবেশনা শুধু শিল্পরসই নয়, সমাজে ন্যায়, সাম্য ও মানবিকতার বার্তাও পৌঁছে দেয়।
স্মরণে মহীরূহরা
অনুষ্ঠানে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয় বাংলা সাহিত্যের ও সংগীতের একাধিক মহীরূহকে। বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় সুকান্ত ভট্টাচার্য ও সলিল চৌধুরীর শতবর্ষ। পাশাপাশি সম্মান জানানো হয় প্রয়াত সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মী আজিজুল হক, রাহুল পুরকায়স্থ ও প্রফুল্ল রায়কে।
সমাজসচেতন সাংস্কৃতিক প্ল্যাটফর্ম
‘পদাতিকের কলরব’-এর মাধ্যমে বেরঙিন কলম প্রমাণ করল— সংস্কৃতি শুধু বিনোদন নয়, বরং সমাজবদলের হাতিয়ারও বটে। সাহিত্য, সংগীত ও নাটকের সেতুবন্ধনে এই আয়োজন আগামী দিনে সমাজসচেতন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের দিকেই নতুন আলো ফেলল।
