দুধ খারাপ হলে আমরা অনেক সময় বলি—”নষ্ট হয়েছে!”
কিন্তু একটু ভেবে দেখুন, সেই খারাপ দুধ থেকেই হয় দই, যার দাম দুধের চেয়ে বেশি। দই যদি আরও খারাপ হয়, তা পনিরে রূপান্তরিত হয়—যার দাম দুধ বা দইয়ের চেয়েও বেশি।
আবার ধরুন আঙুরের রস টক হয়ে গেলে কি আমরা তা ফেলে দিই? না, সেটি ওয়াইনে পরিণত হয়—একটি বিলাসবহুল ও দামী পানীয়। অর্থাৎ, কোনো কিছুর অবনতি মানেই তার মূল্য কমে যাওয়া নয়। ঠিক তেমনভাবেই ভুল করাও ব্যর্থতা নয়, বরং নতুনভাবে গড়ে ওঠার সুযোগ।
ভুল করতে করতে শিখেছেন অনেক বিখ্যাত মানুষ।
ক্রিস্টোফার কলম্বাস ভুল পথে গিয়ে আবিষ্কার করেছিলেন আমেরিকা।
আলেকজান্ডার ফ্লেমিং-এর ভুলের ফলেই আবিষ্কৃত হয়েছিল পেনিসিলিন।
টমাস আলভা এডিসন বলেছিলেন, “আমি শত শতবার ভুল করেছি, আর এই ভুলগুলোই আমাকে শিখিয়েছে নতুন পথ।”
এমনকি “How to change a life” বইটি একবার মুদ্রণের ভুলে “How to change a wife” নামে ছাপা হয়ে যায়। সেটিই হয় বেস্টসেলার!
রবিন শর্মা বলেন, “ভুল বলে কিছু নেই—সবই নতুন শিক্ষা।”
অ্যালবার্ট আইনস্টাইন বলেন, “যে ভুল করেনি, সে কিছু চেষ্টা করেনি।”
বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন বলেন, “উন্নয়ন হলো চেষ্টা আর ভুলের সমন্বয়।”
মাইকেল জর্ডান বলেছেন, “আমি জীবনে বারবার ভুল করেছি, তাই আমি আজ সফল।”
হেনরি ফোর্ড বলেন, “ভুল মানে নতুন করে শুরুর সুযোগ।”
রিচার্ড ব্রানসন বলেন, “চেষ্টা আর ভুল থেকেই শেখা যায় চলার পথ।”
কলিন পাওয়েল বলেন, “নেতৃত্ব তৈরি হয় অভিজ্ঞতা, ভুল আর অধ্যবসায়ে।”
এমনকি আমাদের জীবনেও অনেক ভুল সম্পর্ক, ভুল সিদ্ধান্ত, ভুল মানুষ আসে। কিন্তু এসবই আমাদের পরিণত করে।
এক প্রেমিক বলেছিলেন—”ভুল মানুষের প্রেমে পড়া মানে, শুদ্ধ মানুষের মূল্য বোঝার নতুন সুযোগ।”
ভুল করাটা অপরাধ নয়। বরং ভুল স্বীকার করে, ভুল থেকে শেখার মানসিকতা তৈরি করাটাই সবচেয়ে বড় গুণ।
ভুল মানুষ নয়, ভুল ভুলে না থাকা মানুষ সবচেয়ে বিপজ্জনক।
পেন্সিল মানসিকতা রাখুন—যাতে ভুল করলে মুছে ফেলা যায়।
কলম মানসিকতা নয়, যেখানে নিজেকে নির্ভুল ভাবা হয়, অথচ কিছুই ঠিকভাবে আঁকা যায় না।
তাই জীবনকে সুন্দর করতে চাইলে ভুল থেকে ভয় না পেয়ে, প্রতিবার চেষ্টা করে যাওয়াটাই বড় শিক্ষা। ভুল করলেও হাল ছাড়বেন না। কারণ পারফেকশন আসে ভুল থেকে শেখার মধ্য দিয়েই, অনুশীলন নয়।
